বাংলাদেশের ক্রিকেটের বর্তমান সময় তো বটেই বরং বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা ক্রিকেটারই বলা চলে সাকিব আল হাসানকে। দেশ সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের ৩৫তম জন্মদিন আজ। ১৯৮৭ সালের ২৪শে মার্চ মাগুরায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। নিজের জন্মদিনটা এর চেয়ে ভালো ভাবে হয়তো পালন করা যেত না সাকিবের জন্য। কারণ, জন্মদিনের কয়েক ঘন্টা আগে প্রথম বারের মত দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে তাদেরকে হারিয়ে সিরিজ জয় লাভ করে বাংলাদেশ দল। আর সাকিব সেই দলের গুরুত্বপূর্ণ এবং গর্বিত এক সদস্য। যদিও পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ থাকায় মানসিক ভাবে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছেন সাকিব। তবে ব্যাট-বলে ঠিকই তিনি দুর্দান্ত, অপ্রতিরোধ্য।
বাংলাদেশের অনেক জয়ের মহানায়ক এই সাকিব। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন তিনি। এমন অনেক রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন তিনি যে রেকর্ড বাংলাদেশের কোন ক্রিকেটারই আগে করতে পারেনি। তাছাড়া ক্যারিয়ারের অনেকটা সময়ই কাটিয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হিসেবে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কখনো বা ব্যাট হাতে আবার কখনো বোলিং দিয়ে নিজের জাত চিনিয়েছেন তিনি। দলের উইকেট প্রয়োজন, অধিনায়ক বল তুলে দিয়েছেন সাকিবের হাতে। কারণ, অধিনায়ক জানেন, দলের প্রয়োজনে অন্য সবার চেয়ে সাকিবই বেশি পারেন জ্বলে উঠতে। সাকিব শুধু অধিনায়কের আস্থাই অর্জন করেননি, তিনি পুরো বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের আস্থাই অর্জন করে নিয়েছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের সুনাম বৃদ্ধি করেছেন।
শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটই নয়, ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতেও সাকিব নিজের দাপট ধরে রেখেছেন। আইপিএল, বিপিএল, বিগ ব্যাশ, সিপিএল, কাউন্টি ক্রিকেট থেকে শুরু করে বিশ্বের নামকরা সকল ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতেই সাকিবের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। সাকিবের আগে বাংলাদেশের কোন ক্রিকেটারই এত ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার সুযোগ পায়নি। যা অন্যরা পারেনি, সেটিই করে দেখালেন সাকিব। প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগেই সাকিব নিজের জাত চিনিয়েছেন। চিনিয়েছেন তিনি কেন বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার। বিশেষ করে সাকিব তার স্পিন ঘূর্ণি দিয়ে পরাস্থ করেছেন বিশ্বের নামি-দামি ব্যাটারদের। ইকোনমি বোলিং করার কারণে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে যে কোন অধিনায়কেরই প্রথম পছন্দ সাকিব। অধিনায়কদের সেই আস্থার প্রতিদানও তিনি দিয়ে গিয়েছেন সব সময়।
সব মিলিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটের এক বড় প্রাপ্তি সাকিব। হয়তো বাইশ গজে খুব বেশি বছর আর দেখা যাবে না সাকিবকে। তবে ইতিমধ্যেই তিনি যা করে দিয়ে গিয়েছেন সেজন্যই ক্রিকেট বিশ্ব তাঁকে স্মরণে রাখবে সব সময়। শেষ বেলায়, আবারও শুভ জন্মদিন সাকিব আল হাসান।
সাকিব আল হাসান এর জীবন কাহিনী
বাংলাদেশর অন্যতম সেরা তারকা সাকিব আল হাসান । জার আবদান কখনো ভোলার নয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ বছরে পা দিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তার নাম দিয়েই নতুন করে বাংলাদেশকে চিনেছে ক্রিকেট বিশ্ব। অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে বড় তারকা হয়ে উঠেন মাগুরার এই ক্রিকেটার। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ক্রিকেটারদের একজন হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন তিনি। জাতীয় দলের হয়ে খেলার পাশাপাশি বাংলাদেশের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে বিদেশি লিগগুলোতে নিয়মিত খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে একমাত্র সাকিবেরই। সবচেয়ে বেশিদিন বিশ্বের একনম্বর অলরাউন্ডারের র্যাংকিং ধরে রাখার পাশাপাশি সাকিবের অর্জনের খাতায় যোগ হয়েছে বাংলাদেশের অনেক ‘প্রথম ও দ্বিতীয়’ হওয়ার খেতাব। তার মধ্যে ওয়ানডেতে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ৪০০০ হাজার রান এবং টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০০০ রান সংগ্রহ করার গৌরব। শুধু তাই নয়, বিশ্বের দ্বিতীয় অলরাউন্ডার বাংলাদেশের সাকিব
জন্মঃ
সাকিব আল হাসানের জন্ম ২৪শে মার্চ ১৯৮৭ সালে মাগুরা জেলায় । তার বাবা একজন ফুটবল খেলোয়ার এবং তার মা একজন গৃহিণী । দুই ভাই বোনের মধ্যে সাকিবই বড় ।
বিবাহ
মনে রাখার মতও একটি দিনে সাকিব বিবাহ করেন। ১২+১২+১২ মানে ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসের ১২ তারিখ শিশিরের সাথে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হোন। বর্তমানে তিনি এক কন্যা সন্তানের জনক। তার মেয়ের নাম আইলানা ।
বিবাহের দুই বছর পর। স্ত্রীর জন্ম দিনে সাকিব তার ফেসবুক পেজে লেখেন , বিশ্বের সবার কাছে আমি নাম্বার ওয়ান হতে পারি, তবে আমার কাছে সবসময় তুমিই নাম্বার ওয়ান । তিনি আরো বলেন শিশির তোমার জন্মদিনে রইলো শুভেচ্ছা। ধন্যবাদ আমার পাশে ভালো এবং খারাপ সময়ে থাকার জন্য। তোমার মতো একজন শহধরমিনী পেয়ে আমি নিজেকে ধন্য মনে করি।
আভিষেকঃ
২০০৬ সালের আগষ্টে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় সাকিব আল হাসানের। অভিষেক ম্যাচে সাকিব ব্যাট হাতে ৩০ রানের পাশাপাশি বল হাতে ৩৯ রান খরচায় একটি উইকেট নিয়েছিলেন। একই বছর, একই দলের বিপক্ষে নভেম্বরে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয় সাকিবের। ওই ম্যাচে ২৬ রানের পাশাপাশি একটি উইকেট পকেটে পুরেছিলেন তিনি। জাতীয় দলের হয়ে রঙিন পোষাকে অভিষেকের এক বছর পর ২০০৭ সালে ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে অভিষেক হয় সাকিব আল হাসানের। টেস্টের অভিষকটা উল্লেখ্যযোগ্য হয়নি তরুণ সাকিবের। প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে ২৭ রান করেন তিনি। প্রথম ইনিংসে ১৩ ওভার হাত ঘুরালেও উইকেট শূন্য ছিলেন তিনি। অন্যদিকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট কিংবা বল কোনটাই করেননি সাকিব। সেই থেকে তাকে আর পিচনে ফিরে তাকাতে হয় নাই।
উল্লেখ্য যে, এক ইনিংসে ব্যাট হাতে টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২১৭ রান করেন তিনি ।
Post a Comment