সম্প্রতি এক দম্পতির বিরুদ্ধে বিটকয়েনের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। নিজেদের ‘ওয়াল স্ট্রিটের কুমির’ মনে করা যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহ্যাটনের বাসিন্দা এই দম্পতির এখন পর্যন্ত ২৭ হাজার কোটিরও বেশি টাকার বিটকয়েন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
ওয়াশিংটন পোস্ট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩৪ বছরের ইলিয়া ডাচ লিচেনস্টাইন এবং হিদার আর মরগানকে কয়েকদিন আগে আদালতে তোলা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কোটি কোটি বিটকয়েন ব্যয় করার অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০১৬ সালে বিটফাইনেক্স কারেন্সি এক্সচেঞ্জ হ্যাক করে কোটি কোটি টাকার ক্রিপ্টো-কারেন্সি চুরি করে তারা।
তদন্তকারীদের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, এটি ৬ বছরের পুরাতন মামলা। এই ঘটনায় প্রায় ৩৭ হাজার টাকা মূল্যের ওয়ালমার্ট গিফট কার্ডের তদন্ত শুরু করেন তদন্তকারীরা। ওই দম্পতি রাশিয়ায় রেজিস্টার্ড একটি ই-মেইল পাঠিয়েছিল। তদন্তে জানা যায়, নিউইয়র্কের ক্লাউড পরিষেবা প্রদানকারীর আইপি অ্যাড্রেস থেকে এই লেনদেন করা হয়েছিল। এর সূত্র ধরে পুরো হ্যাকের বিষয়টি সামনে আসে।
পরে ইলিয়া ডাচ লিচেনস্টাইনের সাথে ওয়ালমার্ট গিফট কার্ডের সংশ্লিষ্টতা পান তদন্তকারীরা। আদালতে তুলে ধরা নথিতে বলা হয়েছে, এসব গিফট কার্ড ওয়ালমার্টের ফোন অ্যাপ থেকে রিডিম করা হয়েছিল। এর মধ্যে তিনটি কেনাকাটা করা হয়েছিল হিদার আর মরগানের নামে। সেখানে তার একটি ই-মেইলও ছিল। তাতে রেজিস্টার্ড ঠিকানা ছিল ওয়াল স্ট্রিট অ্যাপার্টমেন্ট।
বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করে ওই দম্পতি বিটকয়েনকে বৈধ করেছেন বলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। আর এ কাজের জন্য তারা অনেক ভুয়া ই-মেইল আইডি ও ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি করেন। তদন্তে দেখা যায়, বিটফাইনেক্স ওয়েবসাইটে গত পাঁচ বছরে ১ লাখ ১৯ হাজার ৭৫৪ অবৈধ বিটকয়েন লেনদেন করেছেন। এরপর এই ডিজিটাল ফান্ড লিচেনস্টাইনের ডিজিটাল ওয়ালেটে স্থানান্তর করা হয়।
বিটফাইনেক্স একটি ক্রিপ্টো কারেন্সি এক্সচেঞ্জার। ২০১৬ সালের আগস্টে হ্যাকাররা নিরাপত্তাবলয় ভেদ করে ১ লাখ ২০ হাজার বিটকয়েন হাতিয়ে নেয়। সেই সময় এর মূল্য ছিল প্রায় ৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর একটি বিটকয়েনের দাম ছিল ৬০০ ডলার (বাংলাদেশি ৫১ হাজার টাকার বেশি)। বর্তমানে একটি বিটকয়েনের দাম ৪৪ হাজার ২৯৫ ডলারের বেশি।
তদন্তকারীদের দাবি, ২০১৬ সালের হ্যাক সম্পর্কিত ২৭ হাজার কোটি টাকারও বেশি মূল্যের বিটকয়েন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
Post a Comment