মুখের ক্যানসার হয় কি কারণে ও প্রতিরোধ করা যায় কিভাবে!

ক্যানসার একটি মরণব্যাধি। বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের মধ্যে মুখের ক্যানসার অন্যতম। এই ক্যানসার সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয় এমন দেশের তালিকায় বাংলাদেশ তৃতীয়। তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রগতির কারণে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হলে মুখের ক্যানসার নিরাময় সম্ভব।


যাঁরা মুখের ক্যানসারে আক্রান্ত হন, তাঁদের বেশির ভাগের বয়স ৪০ বছরের বেশি। নারীদের তুলনায় পুরুষেরাই এই ক্যানসারে আক্রান্ত হন বেশি। মুখের যেসব অংশ ক্যানসারে আক্রান্ত হয় বেশি, সেগুলো হলো ঠোঁট, জিব, গালের ভেতরের অংশ, মাড়ি, মুখের শক্ত ও নরম তালু, গলার নিচের অংশ।



কি কারণে হয়ে থাকে


মুখের ক্যানসারের অন্যতম কারণ তামাক। সিগারেট, চুরুট, গুল বা জর্দা এই রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এ ছাড়া মদ্যপানও মুখের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে মানুষের জীবনাচরণ ও খাদ্যাভ্যাসও এই ক্যানসারে ভূমিকা রাখে। অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের (এইচপিভি) সংক্রমণ, মুখের ত্বক দীর্ঘদিন অনেকটা সময় ধরে সূর্যের আলোর অতিবেগুনি রশ্মির সংস্পর্শে থাকা, পরিবারের কারও মুখের ক্যানসারের ইতিহাস, দুর্বল রোগ প্রতিরোধক্ষমতা, অপুষ্টি ইত্যাদি।



উপসর্গ


নানা ধরনের উপসর্গ নিয়ে মুখের ক্যানসার শনাক্ত হতে পারে। যেমন ঠোঁট বা মুখে দীর্ঘদিনের ঘা, মুখের যেকোনো জায়গায় অস্বাভাবিক কোনো গোটা বা পিণ্ড, দাঁত পড়ে যাওয়া, গিলতে ব্যথা বা অসুবিধা বোধ করা, গলায় কোনো পিণ্ড দেখা দেওয়া, কানে ব্যথা, ওজন কমে যাওয়া, নিচের ঠোঁট, মুখ, গলা বা গালে অবশ অনুভূতি, জিবে ব্যথা, চোয়ালে ব্যথা বা অবশ ভাব।



চিকিৎসা


উপসর্গ ও লক্ষণ বিবেচনায় সন্দেহ হলে চিকিৎসক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রোগ শনাক্ত করেন। মুখ ও মাথার এক্স–রে, সিটি স্ক্যান, এমআরআই স্ক্যানের দরকার হতে পারে। মুখের ক্যানসারের চিকিৎসাপদ্ধতি রোগের ধরন, অবস্থান, ধাপভেদে ভিন্ন। অস্ত্রোপচার, রেডিয়েশন থেরাপি ও কেমোথেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা করা যায়। সঠিক রোগনির্ণয় এবং সময়মতো চিকিৎসা হলে এই রোগ নিরাময় সম্ভব।



প্রতিরোধ


ক্যানসার মোকাবিলায় প্রতিরোধই সেরা কৌশল। কাজেই পান, সুপারি, সিগারেট, গুল, জর্দাসহ তামাকজাত পণ্য বর্জন করতে হবে। দাঁতের যত্নও নিতে হবে। দিনে দুবার ব্রাশ করা, সঙ্গে ফ্লস-মাউথওয়াশের ব্যবহার রপ্ত করতে হবে। বছরে অন্তত দুবার দাঁতের চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। মুখে যেকোনো ঘা বা আলসার হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি। প্রচুর তাজা ফলমূল এবং বাহারি রঙের শাকসবজি খেতে হবে। এসব খাবার শরীরে অ্যান্টি অক্সিডেন্টের পরিমাণ বাড়ায়। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট অন্যান্য রোগের পাশাপাশি মুখের ক্যানসারের ঝুঁকিও অনেকাংশে কমায়।

সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন, ধন্যবাদ  

1 Comments

Post a Comment

Previous Post Next Post